মোঃ মামুন হোসাইন।স্টাফ রিপোর্টার
প্রিয় পটুয়াখালীবাসী,
আসসালামু আলাইকুম।
পটুয়াখালী জেলা পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান হিসেবে জেলার সর্বস্তরের জনগণকে আমার সশ্রদ্ধ ছালাম ও আন্তরিক শুভেচ্ছা।
পৌরসভা (নির্বাচন আচারণ) বিধিমালা ২০১৫ অনুযায়ী জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের নির্বাচনী প্রচারণায় কোন বাধ্যবাধকতা নেই বিধায় আসন্ন পটুয়াখালী পৌরসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে পৌরবাসীর কাছে আমি কিছুু কথা বলতে চাই।
গৌরবময় ১৫৩ বছরের ঐতিহাসিক জনপদ আমাদের প্রিয় পটুয়াখালী।
পটুয়াখালী পৌরসভার ১৩২ বছরের ইতিহাসে আজ এক যুগসন্ধিক্ষণের মুখোমুখি আমরা। আগামী ৯ মার্চ, পটুয়াখালী পৌরসভা নির্বাচন। মাদক-সন্ত্রাস-দখলদারিত্ব, লুটপাট ও গুজবের বিপরীতে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা ও বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে উন্নয়ন অভিযাত্রার ধারাবাহিকতায় আত্মমর্যাদাশীল পৌরবাসী হিসেবে নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠার সুযোগ আজ আমাদের সামনে।
এই শহরকে কারা মাদকের অভয়ারণ্য বানিয়েছিল আপনারা জানেন। এমন একটা সময় ছিল এই মাদক সিন্ডিকেটের ইশারা ছাড়া পুরান বাজার এলাকার কেউ সম্পত্তি হস্তান্তর করতে পারতো না। যুধিষ্ঠি সাহাকে কারা দেশছাড়া করে তার সমস্ত সম্পত্তি কেড়ে নিয়েছে, ডা. চন্দনের ঘর-বাড়ি কারা দখল করেছে, নিজের কন্যা ধর্ষিত হবার পর কতটা অসহয়াত্ব নিয়ে দেশ ছেড়েছেন নিহর রঞ্জন স্যার এই প্রজন্ম হয়তো তা জানে না। কালাচাঁন সাহার বাড়ি দখল, বাজারের রাস্তা দখল করে বাড়ি, কলেজ রোডে দিনে দুপুরে জায়গা দখলের খবরতো জাতীয় দৈনিকে ৮ কলামে ছাপা হয়েছে। তারা আজ ভোট চায় কোন লজ্জায়!
পৌর নির্বাচন সামনে আসায় তারা আজ বেসামাল হয়ে পড়েছে। পৌর মেয়রকে কেন পূজায় নিমন্ত্রণ জানিয়েছে, এই অপরাধে পূজা কমিটির লোকজনের বাড়ি ঘর ভাঙচুর করেছে গত সপ্তাহে। প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী আইন শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে তিনি জনবান্ধব হিসেবে গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়! তার বোন, পটুয়াখালী সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক জাতির উদ্দেশ্য ভিডিও ভাষণ দিয়েছেন, তার ভাইয়ের জন্য ভোট প্রার্থণা করে। প্রার্থী নিজে আবার তা নিজের ফেইসবুক ওয়ালে শেয়ার করেছেন। ভিডিও ভাষণ শুনে তাদের বড় বোন সাবেক মহিলা এমপি’র সেই দেশকাঁপানো সংসদ বক্তৃতা’র কথা স্মরণে এসে যায়, যেই ভাষণ পটুয়াখালীবাসীর মান সম্মান সব ধুলায় মিশিয়ে দিয়েছিল।
তারা ৮ বছর পৌরসভার দায়িত্বে ছিল। সেই ধুলায় ধুসর ৮ বছরের কথা পৌরবাসী ভুলে নাই। খানা খান্দে ভরা ছিল সকল সড়ক, যার কারণে পৌরবাসীর কোমর ব্যাথা আর মেয়র বাদল সিন্ডিকেটের পকেটভারী ছাড়া আর কি উন্নয়ন হয়েছে?
৫ বছরের ক্ষমতা আইনি প্যাচ দিয়ে ৮ বছর করেছে।
প্রিয় পৌরবাসী, একদা এই পটুয়াখালী ছিল অন্যতম পশ্চাদপদ একটি জেলা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী উন্নয়ন পরিকল্পনায় পটুয়াখালী আজ ঈর্শ্বা জাগানিয়া জেলায় পরিণত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যার যে শতবর্ষী ডেল্টা প্লান, পটুয়াখালী হবে সেই বদ্বীপ পরিকল্পনার কেন্দ্রবিন্দু। বর্তমান মেয়র শতবর্ষী পরিকল্পনার আলোকেই জেলা সদরকে সাজিয়েছে অপরূপ নান্দনিকতায়, যার বিস্তারিত বিবরণ উল্লেখ করার কোন প্রয়োজন পরে না।
মনে রাখতে হবে বর্তমান মেয়রের ৫ বছরের মধ্যে করোনাকালীন মহামারীতেই কেঁটে গেছে ২ বছরের অধিক সময়। এই স্বল্প সময়ের মধ্যে ১০০ বছর মেয়াদী মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী যেভাবে পৌর নগরীর আধুনিকায়ন শুরু হয়েছে তা দেখতে দেশ বিদেশ থেকে পর্যটক আসছে আমাদের শহরে। ইতোমধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রায় সকল সড়ক আধুনিক ড্রেনেজ সিস্টেম সহযোগে প্রশস্ত করা হয়েছে। পৌরসভায় নতুন অধিভুক্ত এলাকাসমূহের উন্নয়ন চলমান।এই শহরের ১ ইঞ্চি জায়গাও পরিত্যক্ত থাকবে না।
গুজব ছড়িয়ে সচেতন পৌরবাসীকে বিভ্রান্ত করা যাবে না। এই শহরের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায়, মাদক সন্ত্রাসমুক্ত জনপদ হিসেবে, অধুনিক, স্মার্ট পৌরসভা গড়তে আগামী ৯ মার্চ পৌরসভা নির্বাচনে নির্ভয়ে আপনি আপনার দায়িত্বশীল ম্যান্ডেট প্রদান করুন।
সকলকে নিয়েই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ধারায়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য গৌরবময় পৌরশহর নির্মিত হবে ইনশাআল্লাহ।
নান্দনিক শহর হিসেবে পটুয়াখালী আজ দেশজুড়ে যেভাবে প্রশংসিত, কোন অপশক্তি যেন আমাদের এই গৌরব কেড়ে নিতে না পারে সেই আহ্বান জানাই সকলের কাছে।
ধন্যবাদসহ
এ্যাডভোকেট হাফিজুর রহমান
চেয়ারম্যান
পটুয়াখালী জেলা পরিষদ।
Leave a Reply