সেলিম মাহবুব,সিলেট:
ইভটিজিংয়ের দায়ে ছাতক সরকারি কলেজের প্রভাষক ও বিএনসিসি প্লাটুন কমান্ডার একেএম বাকের হোসেন হাওলাদারকে কলেজ বিএনসিসি প্লাটুনের দায়িত্ব থেকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। ময়নামতি রেজিমেন্ট ৭ বিএনসিসি ব্যাটালিয়নের ছাতক সরকারি কলেজ বিএনসিসি প্লাটুনের দায়িত্বে নিয়োজিত পি-৪২৭ পিইউও একেএম বাকির হোসেন হাওলাদারকে কলেজ বিএনসিসি প্লাটুননের সমস্ত কার্যক্রম ও দায়িত্ব থেকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি প্রদান করা হয়। ময়নামতি রেজিমেন্ট কমান্ডারের পক্ষে মেজর মোঃ শাহরিয়ার কবির সাক্ষরিত পত্রে এ আদেশ প্রদান করা হয়েছে। ছাতক সরকারি কলেজের প্রভাষক ও বিএনসিসি প্লাটুন কমান্ডার (পিইউও) একেএম বাকের হোসেন হাওলা দারের বিরুদ্ধে ইভটিজিংয়ের অভিযোগ করেছেন ওই কলেজের এক শিক্ষার্থী। কলেজ অধ্যক্ষ বরাবরে গত ২৪ মার্চ এই অভিযোগ দেন কলেজ বিএনসিসি মহিলা প্লাটুনের ক্যাডেট সার্জেন্ট। অভিযোগের কপি সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সহ বিভিন্ন দপ্তরে দেয়া হয়েছে। লিখিত অভিযোগটি কলেজ কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করেন ২৪ মার্চই গ্রহণ করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে অভিযোগের কপি গ্রহণ করা হয়েছে ২৬ মার্চ সকাল ১১.৩৫ ঘটিকার সময়। অভিযোগ থেকে জানা গেছে, গত বছরের অক্টোবর মাসে কুমিল্লা ময়নামতি রেজিমেন্ট ক্যাম্পে ৯ জন ক্যাডেট নিয়ে ছাতক থেকে রাতের বাস যোগে ছাতক সরকারি কলেজের প্রভাষক ও বিএনসিসির দায়িত্বে থাকা পিইউও একেএম বাকের হোসেন হাওলাদার কুমিল্লা যান। এরমধ্যে ৭ জন মহিলা ক্যাডেট ও ২ জন পুরুষ ক্যাডেট ছিলো। বাসে সু-কৌশলে একেএম বাকের হোসেন হাওলাদার তার পাশের সিটে বসিয়েছেন অভিযোগকারী ওই মহিলা ক্যাডেট সার্জেন্টকে। রাতের বেলা চলন্ত বাসের মধ্যে পিইউও একেএম বাকের হোসেন হাওলাদার তার পাশে বসা ওই ভুক্তভোগী মহিলা ক্যাডেট সার্জেন্টের শরীরে গা ঘেষে বারবার বিরক্ত করতে থাকেন। খারাপ ইঙ্গিত সহ হাতে হাত ধরে বারবার তার শরীর স্পর্শ করেছেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে ওই ভুক্তভোগী মহিলা ক্যাডেট সার্জেন্টের মোবাইল ফোনে “মিস ইউ” সহ নানা ধরনের কু-ইঙ্গিতযুক্ত যাহা মেয়েদের তার প্রতি আকৃষ্ট হয় এমন ধরনের ম্যাসেজ পাটিয়ে তাকে বিরক্ত করেছেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রভাষক ও পিইউও একেএম বাকের হোসেন হাওলাদারের বিরুদ্ধে ইভটিজিংয়ের আরো অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে অনেকেই মান সম্মানের ভয়ে মুখ খুলতে নারাজ। কলেজের কোন ক্যাডেট যদি ঘটনাক্রমে এ প্রভাষক একেএম বাকের হোসেন হাওলাদারের কোন ধরনের অনিয়ম দুর্নীতি ও অসামাজিক কার্যকলাপ দেখে পেলে তাহলে ওই ক্যাডেটকে বাকের হোসেন হাওলাদার সু-কৌশলে কলেজ প্লাটুন থেকে বের করে দেন। যার ফলে প্রভাষক বাকের হোসেন হাওলাদারের অপরাধের মাত্রা দিনদিন বেড়েই চলছে। অভিযোগে আরো উল্লেখ রয়েছে, কলেজের বিএনসিসি ক্যাডেটদের প্রশিক্ষণে ছেলেদের পরিবর্তে মেয়েদের প্রাধান্য বেশী দেন পিইউও একেএম বাকের হোসেন হাওলাদার। সিলেট, কুমিল্লা অথবা ঢাকায় কোন প্রশিক্ষনের নির্দেশ আসলে একেএম বাকের হোসেন হাওলাদার ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের বেশী নিয়ে যান। অভিযোগ উঠেছে, প্রশিক্ষণ শেষে তার পছন্দমতো একজন মেয়ে নিয়ে ট্রেনিং এলাকার বাইরে ঘন্টার পর ঘন্টা ঘুরতে যান। এছাড়াও বিএনসিসির নামে বিভিন্ন সময়ে বরাদ্দ সরকারি অর্থ তিনি ভুয়া বিল-ভাউচার দেখিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। তার অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি ২০১১ সালের ১৬ জুলাই বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশ হয়েছে। এতসব অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও অজ্ঞাত কারনে নারী ও অর্থলোভী প্রভাষক একেএম বাকের হোসেন হাওলাদার এখনো রয়েছেন ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। প্রভাষক ও কলেজ বিএনসিসি প্লাটুন কমান্ডার পিইউও একেএম বাকের হোসেন হাওলাদারকে ইভটিজিংয়ের দায়ে ময়নামতি রেজিমেন্টে কর্তৃক সাময়িক অব্যাহতি প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করে ছাতক সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ তুলসী চরণ দাস বলেন, এ ব্যাপারে কলেজ কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পাওয়ার পর এক্ষেত্রে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply