মোহাম্মদ মাসুদ
চট্টগ্রাম মহানগরে অর্ধকোটি টাকার স্বর্ণ ও নগদ টাকা হাতিয়ে নেই চোরচক্র। অবশেষে ধরা খেলো সিএমপি মহানগর গোয়েন্দা (বন্দর ও পশ্চিম) বিভাগের অভিযানে। গল্প সিনেমা নাটকে নয়,বাস্তবেই ধরা খেলো ডিবি পুলিশের হাতে। ভুক্তভোগীর ২৩ ভরি স্বর্ণালংকার এবং হজ করতে যাওয়ার রক্ষিত ১৮ লক্ষাধিক টাকা চুরির মামলার ঘটনায় জড়িত দুইজন গ্রেফতার ও তাদের হেফাজত থেকে আনুমানিক সাড়ে ১৩.৫ ভরি স্বর্ণালংকার ও দুই লক্ষ টাকা উদ্ধার।
১১ জুন থেকে টানা ৩০ ঘন্টা অভিযানে
ঢাকা, কুমিল্লা এবং নোয়াখালীসহ বিভিন্ন জায়গায় চুরির ঘটনায় জড়িত নুরনবী সাকিব (২৩) এবং মোঃ আশিকুর রহমান (২৫)’কে আটক করে। আটকের সময় চুরির ১৩৫ গ্রাম বা ১৩.৫ ভরি স্বর্ণালংকার এবং নগদ ২,০০,০০০ (দুই লক্ষ) টাকা উদ্ধার করেন।
পুলিশ সূত্রে ঘটনাক্রমে জানা যায়, গত ১৩মে, রাতে থেকে সকালের মধ্যে অজ্ঞাতনামা চোরেরা জানালার গ্রিল কেটে আনুমানিক ২৩ ভরি স্বর্ণালংকার এবং বাদী ও বাদীর স্ত্রীর হজ করতে যাওয়ার জন্য রক্ষিত নগদ ১৮,৮০,০০০/- চুরি করে নিয়ে যায়। মামলার বাদী মোঃ জসিম উদ্দিন (৪৬) তার স্ত্রী ও ছোটো ছেলেকে নিয়ে ঢাকায় অবস্থানকালীন সময়ে এই ঘটনা ঘটে। উক্ত বিষয়ে ডবলমুরিং থানার মামলা রুজু হয়।
মামলাটির তদন্তভার মহানগর গোয়েন্দা (বন্দর-পশ্চিম) বিভাগে হস্তান্তর হলে উপ-পুলিশ কমিশনার (বন্দর ও পশ্চিম) মোহাম্মদ আলী হোসেন (অতিরিক্ত ডিআইজি) সার্বিক তত্ত্বাবধানে এবং অতি. উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ সামীম কবির এবং সহকারী পুলিশ কমিশনার মোঃ মাহমুদুল হাসান চৌধুরীর নির্দেশনায় পুলিশ পরিদর্শক মোঃ সাখাওয়াৎ হোসেন, এসআই মোহাম্মদ রাজীদ হোসেন, এসআই মোঃ রবিউল ইসলাম সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্সগণ ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার এবং গোপন সংবাদে আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করে। এরে ধারাবাহিকতায় আসামিদের আটক করে।
আসামিরা পেশাদার চোর/ছিনতাইকারী। আসামিরা ইতোপূর্বেও চুরি/ছিনতাইয়ের অপরাধে অনেকবার গ্রেফতার হয়েছিল। আসামিরা এই মামলায় ইতোপূর্বে গ্রেফতার হওয়া রাতুল এবং সালাউদ্দিনসহ বিভিন্ন বাসাবাড়িতে চুরি করার পরিকল্পনা করে। তারা বিভিন্ন এলাকার বাসা-বাড়িতে রেকি করে যে-সকল বাসা বাড়িতে লোকজন থাকে না সেসব বাসার মেইন দরজার তালা ভেঙে অথবা জানালার গ্রিল কেটে বাসার ভিতর প্রবেশ করে চুরি করে। এই মামলার ঘটনার দিন আসামিরা দিনের বেলায় ডবলমুরিং থানাধীন চৌমুহনী এলাকায় ঘুরাঘুরি করে বাসা নির্ধারণ করে চলে আসে। বাসায় কেউ নাই তা নিশ্চিত হয়ে রাত ০৩:০০-০৪:৩০ টায় আসামিরা বাসার বাইরে থেকে পাশের বিল্ডিংয়ের কার্নিশ দিয়ে উঠে জানালার গ্রিল কেটে বাসায় প্রবেশ করে বাসার স্টিল আলমারির ড্রয়ারের তালা ভেঙে বাদী দম্পতির হজে যাওয়ার জন্য রাখা নগদ ১৮,৮০০০০/- টাকা এবং ২৩ ভরি ০৬ আনা ওজনের স্বর্ণের অলংকার চুরি করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে চোরাই টাকা এবং স্বর্ণালংকার আসামি নুরনবী সাকিব এবং মোঃ আশিকুর রহমানসহ অস্ত্র মামলায় ইতোপূর্বে গ্রেফতার হওয়া রাতুল এবং সালাউদ্দিন ভাগাভাগি করে অজ্ঞাত স্থানে পালিয়ে যায়। মোঃ আশিকুর রহমান তার নিজ বাড়ি কুমিল্লার দেবিদ্বার এবং নুরনবী সাফিন ঢাকায় পালিয়ে যায়।
Leave a Reply