মোহাম্মদ মাসুদ
চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা নিরসণ বড় চ্যালেঞ্জ! সমাধানে দরকার জনগণের সহযোগিতা ও সংস্থাগুলোকে সমন্বয় করতে হবে বললেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের জলাবদ্ধতা, ডেঙ্গু পরিস্থিতি ও সার্বিক কর্মকান্ড নিয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ মত বিনিময় সভা এসব কথা বলেছেন।
রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকালে টাইগারপাসস্থ চসিক কার্যালয়ে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা বলেন,
সভায় জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধানে সংশ্লিষ্ট সবগুলো সংস্থাকে প্রতিবন্ধীকতা চিহ্নিত করে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করতে হবে। শুধু প্রকল্পের মাধ্যমে জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধান সম্ভব না। এজন্য প্রয়োজন জনগণের সহযোগিতা। জনগণকে সচেতন করতেও কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে চট্টগ্রামে চলমান ৪টি প্রকল্প দ্রুত শেষ করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতাগুলোকে চিহ্নিত করে দ্রুত সমাধানের ব্যবস্থা করতে হবে। এ. এফ. হাসান আরিফ আরো বলেন, চট্টগ্রামের সাথে দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি জড়িত। এজন্য এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সংস্থাগুলোকে ইগো ত্যাগ করে জনস্বার্থে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে। জলাবদ্ধতা নিরসণ চট্টগ্রামের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
সভায় প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কার্যক্রম সম্পর্কে উপদেষ্টা মহোদয়কে অবহিত করেন।
জলাবদ্ধতা নিরসণে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) প্রকল্পের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফেরদৌস আহমেদ বলেন, “চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসণ প্রকল্পের ভৌত কাজে ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড ২০১৮ সাল থেকে কাজ করছে। সংশোধিত ডিপিপি অনুযায়ী ভৌত অবকাঠামো নির্মাণের অগ্রগতি ৭১.৬০ শতাংশ, আর্থিক অগ্রগতি ৫০.২২ শতাংশ।
সভায় সিভিল সার্জন ও চসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মো. ইমাম হোসেন রানা জানান, ডেঙ্গুতে মৃত্যুহার কমানোর ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ হলো প্রাথমিক পর্যায়ে রোগীকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা। কেউ জ্বরে আক্রান্ত হলে রোগী বা রোগীর স্বজনরা যদি প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা নেন তাহলে মৃত্যুহার কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।
প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার লতিফুল হক কাজমি বলেন, ৪১টি ওয়ার্ডেই নিয়মমাফিক মশা ঔষধ ছিটানোর পরও দেখা যাচ্ছে কয়েকটি ওয়ার্ডে মশা কমছেনা। অথচ একই ঔষধে অন্যান্য এলাকায় মশা নিয়ন্ত্রণে আছে৷ এতে ধারণা করছি বিদ্যমান ঔষধের প্রতি কিছু প্রজাতির মশার হয়তো প্রতিরোধক্ষমতা তৈরি হয়েছে৷জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মশার জীবনচক্রও বদলে যাচ্ছে। এজন্য মশা নিয়ন্ত্রণের বিজ্ঞানভিত্তিক উপায় জানতে গবেষণা প্রয়োজন। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের পরামর্শে ভেষজ মেডিসিন মস্কুবান ব্যবহার করে সাফল্য পাওয়া গেছে৷এধরনের মশা নিয়ন্ত্রণের কার্যকর উপায় খুঁজতে গবেষণা প্রয়োজন৷
সভায় পানি উন্নয়ন বোর্ড, চট্টগ্রাম ও সেনাবাহিনী কর্তৃক যৌথভাবে বাস্তবায়নাধীন চট্টগ্রাম মহানগরী জলাবদ্ধতা নিরসন, নিষ্কাশন ও উন্নয়ন প্রকল্পের বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী শিবেন্দু খাস্তগীর এবং বারইপাড়া খাল খনন প্রকল্পের অগ্রগতি তুলে ধরেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ফরহাদুল আলম।
সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার মোঃ তোফায়েল ইসলাম বলেন, ডেঙ্গু থেকে জনগণকে বাঁচাতে চসিকের স্বাস্থ্য বিভাগকে ভূমিকা রাখতে হবে। ডেঙ্গু পরীক্ষার পর্যাপ্ত কীট এবং হঠাত করে রোগীর চাপ দেখা দিলে রোগীদের চিকিৎসা প্রদানের বিষয়ে প্রস্তুতি নিতে হবে।
সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত সচিব এ এইচ এম কামরুজ্জামান, চসিক সচিব মো. আশরাফুল আমিন, আইন কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন, প্রধান প্রকৌশলী শাহীন-উল-ইসলাম, প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির চৌধুরীসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
Design & Developed BY: ServerSold.com
https://writingbachelorthesis.com
Leave a Reply