আহসান হাবীব স্টাফ রিপোর্টার
নোয়াখালী সুবর্ণচরে চাঁদা না পেয়ে দোকান ও ভবনে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় হামলায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে সাতজন। শনিবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার চর জুবলী ইউনিয়নের পাংখার বাজার কমিউনিটি ক্নিনিক–সংলগ্ন স্থানে এ ঘটনা ঘটে। জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করার পর পুলিশ গিয়ে আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে। পরে তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শনিবার দুপুরের দিকে ২৫-৩০ জনের একদল লোক ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে পাংখার বাজার কমিউনিটি ক্লিনিক–সংলগ্ন একটি ভবন ও সংলগ্ন ভিটা দখল করতে আসেন। এ সময় ভিটার মালিক কামাল হোসেনের লোকজন বাধা দিলে তাঁদের ওপর হামলা চালানো হয়। হামলাকারীরা কামাল হোসেনের দুই ছেলেসহ কমপক্ষে সাতজনকে পিটিয়ে আহত করে একটি কক্ষের মধ্যে আটকে রাখেন । হামলাকারীরা ভিটায় অবস্থিত দোকানঘর এবং একটি দ্বিতল ভবনের নিচতলার জানালার কাচ ভাঙচুর করেন। পাশাপাশি নগদ টাকা লুট করে নিয়ে যান তাঁরা।
হামলার শিকার চর মধ্যম বাগ্গা গ্রামের কামাল হোসেনের পুত্র বেলাল হোসেন বলেন, পাংখার বাজারে তাদের বসতবাড়ি ও একটি দোকানের ভিটা রয়েছে। দোকানের ভিটায় তিনি ভাঙারি মালামালের ব্যবসা করেন। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জসিম উদ্দিন ও মাইন উদ্দিন নামের বিএনপির দুই নেতা তাঁর ভিটা থেকে তাঁকে উচ্ছেদের পরিকল্পনা করেন এবং নানা হুমকি দিতে থাকেন। দোকান ও ভিটা দখলে রাখতে চাইলে তাঁদের ৫ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে বলে জানান। তখন তিনি স্থানীয় লোকজনকে বিষয়টি জানিয়ে রাখেন।
কামাল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, গত শুক্রবার জসিম উদ্দিন ও মাইন উদ্দিন পুনরায় তাঁর কাছে দাবি করা চাঁদার টাকা চান। তখন তিনি টাকা দিতে অস্বীকার করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শনিবার দুপুর আনুমানিক ১২টার দিকে জসিম উদ্দিন ও মাইন উদ্দিন দলবল নিয়ে এসে তাঁর বাজারের ভিটা দখলের চেষ্টা চালান। এ সময় তিনি বাধা দিলে তাঁর দুই ছেলেসহ পরিবারের সদস্যদের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে তার ছেলেসহ পরিবারের সদস্যদের মারধর করেন। হামলাকারীরা তাঁর পরিবারের লোকজনকে একটি দোকানের কক্ষে রাখেন। পরে তাঁরা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন দেওয়ার পর পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে। পুলিশ উদ্ধার করে হাসপাতালের নেওয়ার সময়ও আহত ব্যক্তিদের ওপর পুনরায় হামলা চালানো হয় বলেও অভিযোগ করেন কামাল হোসেন।
হামলার অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য অভিযুক্ত জসিম উদ্দিন ও মাইন উদ্দিনের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তাঁরা ফোন ধরেননি। তাই অভিযোগের বিষয়ে তাঁদের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পাংখার বাজার এলাকায় একাধিক ব্যক্তি বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মী পরিচয়ে দখল চালিয়ে যাচ্ছে।
চর জুবলী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন বলেন, জসিম উদ্দিন ও মাইন উদ্দিন আগে আওয়ামী লীগের লোকজনের সঙ্গে চলাফেরা করতেন। সরকার পরিবর্তনের পর এখন তাঁরা বিএনপি হয়ে গেছেন। শুধু তা–ই নয়, বিএনপির নাম ভাঙিয়ে তাঁরা নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েছেন।
চর জব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি শাহিন মিয়া বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে থানা-পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনায় তিনি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। অভিযোগটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Design & Developed BY: ServerSold.com
https://writingbachelorthesis.com
Leave a Reply