মিঠুন পাল, পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি
পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার চর বিশ্বাস ইউনিয়ন ভূমি অফিসে তহশিলদারের স্বঘোষিত আইনেই চলে সরকারি ভূমি সেবা কার্যক্রম।বন্দোবস্ত দেয়া জমি অন্যের কাছে অবৈধ লেনদেনে ভোগ দখল করে চাষাবাদের অনুমতি দেয়। এমনই অভিযোগ ভূমি অফিসে সেবা নিতে আসা সেবা গৃহীতাদের ও সরকারি বন্দোবস্ত নেয়া ভূমি মালিকদের। তরমুজ চাষীরা জানায়, ২০০৪-৫ সালে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী দক্ষিণ চর বিশ্বাস ও চর মায়া মৌজায় ৫৫ জনের প্রত্যেককে১.৫ একর করে মোট ৮৪.৫ একর জমি গলাচিপা উপজেলা ভূমি কর্মকর্তার মাধ্যমে বন্দোবস্ত নেয় স্থানীয় তরমুজ চাষিরা। বন্দোবস্ত নেয়ার পর থেকেই চাষিরা নিয়মিত তরমুজ চাষ করে আসছিল, তবে ২০২৩ সালের মে মাসে তহশিলদার মিলন মিয়া চর বিশ্বাস ভূমি অফিসে যোগদানের পর থেকেই পাল্টে যায় নিয়ম। বন্দোবস্ত নেয়া জমির মালিকদের না জানিয়েই অর্থের বিনাময় অপর একটি পক্ষকে চরের চারপাশে ভেরিবাঁধ দিয়ে চর দখল করার অনুমতি দেয়।
দিশেহারা স্থানীয় গরিব তরমুজ চাষীরা দখলের খবর জানতে পেরে বন্দবস্তের দলিল নিয়ে ভূমি অফিসে গেলে তহশিলদার মিলন মিয়া বলেন, এখানে আপনাদের কোন জমি নেই। এটি সরকারি খাস জমি। এরপরও আপনারা যদি চাষাবাদ করতে চান তবে প্রতি কার্ডে জনপ্রতি ১৫০০০ টাকা দিলে এক বছরের জন্য আমি আপনাদেরকে চাষাবাদের ব্যবস্থা করে দেব, নয়তো আপনারা জমির আশা ছেড়ে দেন। সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, উক্ত জমিতে একই সঙ্গে দুটি ভেকু দিয়ে ভেড়িবার তৈরির কাজ চলছে। ভেকু মালিক নেছার মেম্বর বলেন, তহসিলদার মিলন মিয়ার অনুমতিতে বাঁধের কাজ শুরু করেছিলাম তবে এখন কাজ বন্ধ রাখতে বলেছেন।
ভেকুর অপর মালিক আলামিন হোসেন বলেন, ৪ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মহসিন নামে এক ব্যক্তি তার কাছ থেকে ভেকু ভাড়া নেয় তাই এখানে কাজ করছি। বন্দোবস্ত নিয়া চাষীরা বলেন, মিলন তহশিলদার এক বছরের জন্য ১৫০০০ টাকা চেয়েছে। “যাহারা টাকা দিতে পারবে তাহারা জমি বুঝে নাও”। আমরা গরীব চরের মানুষ তরমুজ চাষ করে আমাদের সংসার চলে, এত টাকা দেয়ার সম্বল আমাদের নাই। পাশেই চর বাংলার জমি, বছরপ্রতি ১৫০০ টাকায় বন্দোবস্ত দিয়েছে ঘাস জমি। শুনেছি ৪ নং ওয়ার্ডের কাওসার হাওলাদার, রনি ডাক, অলিল হাওলাদার (ভিপি নুর এর চাচাত ভাই),তিন নং ওয়ার্ডের মাহাতাব হাওলাদার সহ আরো অনেকে মিলন তহশিলদার কে ম্যানেজ করে জমি দখল করতেছে।
এছাড়া অভিযোগ উঠে মিলন তহশিলদার জমি নামজারির জন্য সরকারি ফি ১১৭০ টাকার পরিবর্তে বিভিন্ন ত্রুটি দেখিয়ে ২০-৩০ হাজার টাকা আদায় করে থাকেন,যাহা সকলেরই জানা। তহশিলদার মিলন মিয়া বলেন, আমি কাউকে ওই জায়গায় কাজ করার অনুমতি দেই নাই। আজ বেলা১১টায় স্বশরীরে চড়ে গিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়ে এসেছি এবং মৌখিক নির্দেশে ভূমি মালিকদের ডেকেছিলাম কেহই আসে নাই। এখন কে বা কাহারা কেন জমিতে কাজ করিতেছে আমি কিছুই জানি না।
এছাড়া জমি নামজারীর জন্য অনলাইন ফি ছাড়া কোন টাকা নেইনা। এ ব্যাপারে গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, আমি তহশিলদারকে নির্দেশনা দিয়ে বলেছি যে প্রয়োজনীয় কাগজ চেক করে সকলকে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা নিয়ে তাদের জমি পরিমাপ করে দিতে।
Design & Developed BY: ServerSold.com
https://writingbachelorthesis.com
Leave a Reply