মনজুরুল ইসলাম স্টাফ রিপোর্টারঃ
টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, পাঁচটি নীতি অনুসরণ করে আগামী ৫ বছরে নান্দনিক, মানবিক ও স্মার্ট সিংড়া হিসেবে গড়ে তোলা হবে। উন্নয়ন ও সুশাসন নিশ্চিত করা হবে।
আগামীতে কোনো দুর্নীতিবাজ, ঘুষখোরকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।
শনিবার (২০ জানুয়ারি) বিকেল নাটোরের সিংড়া উপজেলার গোল-ই আফরোজ সরকারি কলেজ মাঠে আয়োজিত এক নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সিংড়া উপজেলা নাগরিক কমিটি এ নাগরিক সংবর্ধনার আয়োজন করে। এ সময় প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকে মানপত্র ও সম্মাননা স্মারক দেন আয়োজকসহ দলীয় নেতাকর্মীরা।
তৃতীয়বারের মতো প্রতিমন্ত্রী হওয়ায় এবং তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দেওয়াসহ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকে নাগরিক সংবর্ধনার আয়োজন করেন তারা।
উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা আব্দুল আজিজ মাস্টারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, নির্বাচনের প্রাক্কালে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মতামতের ভিত্তিতে যে ইশতেহার প্রণয়ন করা হয়েছিল, তা পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করতে চাই।
পাঁচ লাখ জনগোষ্ঠীর জীবন মান উন্নয়নে দায়িত্ব নিয়েছি, তাদের জন্য কাজ করতে চাই। গত ১৫ বছরে যেসব সমস্যার সমাধান করতে পারিনি তা আগামী ১৫ মাসে সমাধান করা হবে।
তিনি বলেন, আগামীতে নান্দনিক মানবিক সিংড়া গড়ে তোলার লক্ষ্যে পাঁচটি নীতি অনুসরণ করতে চাই। পাঁচটি নীতির প্রথমটি হলো ‘জ্বাল যার জলা তার’। এ নীতিতে সরকারি সব জলাশয়ে জেলেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা হবে। কোনো প্রবাহকে অবৈধ বাধাগ্রস্ত করা হলে তা নির্মূল করা হবে।
দ্বিতীয় নীতি ‘দলিল যার জমির মালিকানা তার’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে সব অবৈধ দখলদারিত্বের অবসান ঘটানো হবে। কোনো অবৈধ দখলদারকে প্রশ্রয়তো দূরের কথা সিংড়ার মাটি থেকে নির্মূল করা হবে।
তৃতীয় নীতি ‘মেধা, যোগ্যতা ও দক্ষতা যার চাকরি তাঁর’ এই নীতি বাস্তবায়নের মাধ্যমে নিয়োগের ক্ষেত্রে সব অবৈধ লেনদেন বন্ধ করা হবে। চাকরির জন্য কাউকে যেন জমি, গরু বা মূল্যবান সম্পত্তি বিক্রি করতে না হয়। ন্যায়সঙ্গতভাবে মেধা, দক্ষতা অনুসারে চাকরি প্রার্থীদের চাকরির ব্যবস্থা করা হবে।
চতুর্থ নীতি হচ্ছে ‘জনপ্রিয়তার নিরিখে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন প্রদান’। এ নীতি বাস্তবায়নের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের সব কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে সৎ, জনবান্ধব ও কর্মীবান্ধব এবং জনপ্রিয় নেতাদের পদে আসীন করা হবে। সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যক্তিকে আগামী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হবে। কোনোভাবেই অযোগ্য লোককে স্থান দেওয়া হবে না।
পঞ্চমত ‘দুর্নীতির মূলোৎপাটন’ নীতি বাস্তবায়নের মাধ্যমে সমাজের এ ব্যাধিকে নির্মূল করা হবে। কোনো দুর্নীতিবাজ, ঘুষখোরকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। পুলিশ, জনপ্রতিনিধির বাইরে সাংগঠনিক শক্তি ব্যবহার করে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তা প্রতিহত করা হবে।
পলক বলেন, ৪১ সাল নাগাদ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা ও জননেত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ তথা স্মার্ট সিংড়া গড়ার জন্য প্রতিবন্ধক দুর্নীতি, সুদ এবং ঘুষ। আগামীতে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এ তিনটি প্রতিবন্ধকতা নির্মূল করতে চাই। জীবনের শেষ পর্যন্ত জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যেতে চাই।
তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, মাত্র ২৬ বছর বয়সে জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে নৌকা প্রতীক দিয়ে সংসদ সদস্য বানিয়েছেন। পরপর পাঁচ বার দলীয় মনোনয়ন দিয়েছেন, চারবার সংসদ সদস্য ও তিনবার প্রতিমন্ত্রী বানিয়েছেন। এবার প্রতিমন্ত্রী করলেও পূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আর সিংড়ার মানুষ ৭৯ শতাংশ ভোট দিয়ে নির্বাচিত করার মধ্য দিয়ে উত্তরাঞ্চলের মধ্যে মর্যাদার আসনে বসিয়েছেন। মা-বোনেরা নিজেদের জমানো টাকা খরচ করে নৌকার পক্ষে কাজ করেছেন। এ ঋণ পরিশোধ করার মতো নয়। আগামীতে উন্নয়ন, সুশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সিংড়ার মানুষের সেবা করতে চাই।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ওহিদুর রহমান শেখ, সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস, সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জিল্লুর রহমান, সিংড়া উপজেলা বণিক সমিতির সভাপতি আসাদুজ্জামান বাচ্চুসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতারা।
এছাড়া অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, পৌরসভার কাউন্সিলর, দলীয় নেতাকর্মী, সমর্থক, শিক্ষক, সাংবাদিক প্রমুখ।
Design & Developed BY: ServerSold.com
https://writingbachelorthesis.com
Leave a Reply