নিজস্ব প্রতিবেদক:-
নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদীতে প্রসূতিসহ নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসকসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) আদেশ দেয় আদালত। রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ১ নং আমলী আদলতের বিচারক মো. জাকির হোসাইন এ নির্দেশ প্রদান করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ১৬ অক্টোবর রাত পৌনে ১২টার দিকে জেলা শহরের সাউথ বাংলা হসপিটালে নোয়াখালীর সেনবাগ পৌরসভার দক্ষিণ কাদরা গ্রামের এম এ আউয়ালের মেয়ে উম্মে সালমা নিশির (২৭) সিজারিয়ান অপারেশনের সময় নবজাতকসহ দুজনের মৃত্যু ঘটে। এ ঘটনায় মৃত নিশির পিতা এম এ আউয়াল এ মামলা দায়ের করেন।
জানা গেছে, গত ১৬ অক্টোবর রাতে সময় এক্সপ্রেস নিউজের বার্তা সম্পাদক ও সেনবাগ প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক এম এ আউয়াল তার একমাত্র মেয়ে নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা উম্মে সালমা নিশির বাবুর ২৪১ হার্টবিট নিয়ে চিকিৎসার জন্য সাউথ বাংলা হসপিটালে আসেন। এ সময় হসপিটাল কর্তৃপক্ষ, ডা:আক্তার হোসেন অভি ও তার স্ত্রী ডা:ফৌজিয়া ফরিদ রোগীর কোনো রকম পরীক্ষা-নীরিক্ষা না করে এবং অভিভাবকের সম্মতি না নিয়েই সিজারে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। মুহূর্তেই মা ও সন্তানের মৃত্যু ঘটে। ঘটনা ধামাচাপা দিতে চিকিৎসক ডা: আক্তার হোসেন অভি তার স্ত্রী ডা:ফৌজিয়া ফরিদ সহ হসপিটাল কর্তৃপক্ষ প্রসূতির অবস্থা সংকটাপন্ন জানিয়ে আইসিইউ সাপোর্টের কথা বলে কুমিল্লায় প্রেরণ করে। পরে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ করা হয়।
মামলার বাদী এম এ আউয়াল বলেন,
‘গত ১৬ অক্টোবর আমার অনুমতি ছাড়া অপারেশন করে। এতে করে আমার মেয়ে ও নবজাতককে হত্যা করা হয়। আমি প্রথমে মৌখিক ও পরে ২৩ অক্টোবর সিভিল সার্জন বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। এক মাত্র মেয়ে ও তার নবজাতকের মৃত্যুতে দীর্ঘ চার মাস আমি মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত ছিলাম। সব শেষ আমি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। হতভাগা পিতা হিসেবে আমার সন্তান ও নাতি হত্যার বিচার চাই।’
পিবিআই জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মিজানুর রহমান মুন্সী বলেন, ”আদালত থেকে মামলার কাগজপত্র এখনো হাতে পাইনি। কাগজপত্র পেলে আমরা নির্দেশনা অনুযায়ী তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিবো।”
উল্লেখ্য, ১২ ফেব্রুয়ারী সময় এক্সপ্রেস নিউজের বার্তা সম্পাদক সাংবাদিক এম এ আউয়াল তার মেয়ে ও নাতির মৃত্যুর ঘটনায় নোয়াখালীর বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ নং আমলী আদালতে ৫ জন নামীয় ও অন্যান্য সহযোগীদের বিরুদ্ধে পেনাল কোড ১৮৬০ এর ১৪৯/৩০৪/৩০২/৩১৪/৩১৬/৪২৭/৫০৬(২)৫১১/১১৯/৩৪ ধারায় সিআর ২৪৪/২৪ দায়ের করেন।
১২ ফেব্রুয়ারী বিজ্ঞ আদালত সার্বিক পর্যালোচনায় ন্যায় বিচারের স্বার্থে নোয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা মাসুম ইফতেখার কে আদেশ প্রাপ্তির ৩ কার্যদিবসের মধ্যে বিভাগীয় প্রতিবেদনের একটি ছায়াকপি আদালতে জমা দেয়ার নির্দেশ প্রদান করে।আজ ১৮ ফেব্রুয়ারী বিজ্ঞ আদালত স্বাস্থ্য বিভাগের ৫ সদস্য বিশিষ্ট গঠিত বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে পিবিআই নোয়াখালীর পুলিশ সুপার কে আগামী ১৮ মে ২০২৪ তারিখের মধ্যে বিষয়ের আলোকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ জারী করেন।অবহেলা এবং ভূল চিকিৎসায় মা ও সন্তানের মৃত্যুর ঘটনায় নোয়াখালীতে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় জড়িত চিকিৎসক ডা: আক্তার হোসেন অভি ডা: ফৌজিয়া ফরিদ,হসপিটাল কর্তৃপক্ষ ও হসপিটালের পরিচালকদের গ্রেফতার সহ সর্বোচ্চ শাস্তির দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
Design & Developed BY: ServerSold.com
https://writingbachelorthesis.com
Leave a Reply