পীরজাদা মোঃ মাসুদ হোসাইনঃ লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিঃ
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে পূর্ব বিরোধের জেরে পান্না আক্তার (৩৫) নামে এক গৃহবধূকে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। পান্না ৯ নং দক্ষিন চরআবাবিল ইউনিয়ন বিএনপি কর্মী দেলোয়ারের স্ত্রী। গুরুতর আহত পান্নাকে প্রথমে রায়পুরে, পরে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে। অভিযোগ স্থানীয় আওয়ামীলীগ কর্মী ইমান আলী, ফরহাদ হোসেন, আনোয়ার হোসেন, মোঃ শাকিল মিঝি,বিল্লাহ হোসেনসহ অজ্ঞাত ১৫ থেকে ১৬ জনের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার (২২মার্চ) উপজেলার ১০নং রায়পুর ইউনিয়নের মিতালি বাজারের আছমা মার্কেটের সামনের সড়কে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ এ হামলা চালায় অভিযুক্তরা। এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মেরে টানাহেঁচড়ার এক পর্যায়ে মাথায় কোপাতে গেলে ভুক্তভোগী পান্না ডান হাত দিয়ে ঠেকালে তিনটি আঙুল জখম হয়। আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করালে অবস্থার অবনতি ঘটায় উন্নত চিকিৎসার জন্য কর্তব্যরত চিকিৎসক আহত গৃহবধূ পান্নাকে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
শনিবার (২৩ মার্চ) আহত পান্নার মা ফাতেমা বেগম (৫৫) বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ৩-৪ জনের নামে রায়পুর থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন।
ফাতেমা বেগম বলেন, তাজুল ইসলামের নির্দেশে সন্ত্রাসীরা আমার মেয়েকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করে। পরে থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তৃপক্ষ তাকে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। বর্তমানে হারুন, জয়নাল ও সিরাজ হাওলাদারের পরিবারের লোকজন আতঙ্কে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
জানা যায়, প্রতিবেশী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাঃ সম্পাদক তাজুল ইসলাম হাওলাদারের সাথে বিএনপি কর্মী দেলোয়ার, ইউনিয়ন বিএনপি নেতা হারুন হাওলাদার, তার ভাই সিরাজ হাওলাদার, জয়নাল আবদীন হাওলাদারের বিরোধ চলে আসছে। গত ১৫ মার্চ সকাল ৯ টায় দেলোয়ার, মিজান, হৃদয়, পান্না, আঁখিসহ ১০/১২ জন দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে তাজুল ইসলামের ঘরে হামলা করে। হামলায় তাজুল ইসলামের ডান পা ভেঙ্গে যায় ও তার ছেলে মারাত্মক আহত হয়। হামলাকারীরা স্থানীয় মিতালীবাজারে তাজুল ইসলামের জামাতা ঈমান আলীর দোকানে হামলা চালিয়ে তাকেও মারাত্মক আহত করে। পরবর্তীতে তাজুল ইসলামের কর্মী-সমর্থকেরা উত্তেজিত হয়ে সিরাজ হাওলাদারের ঘর ভাংচুর করে, জয়নাল আবদীন ও হারুন হাওলাদারের একটি মটরসাইকেলসহ ঘরের জানালা ভাংচুর করে। এসব বিষয়ে উভয় পক্ষে পাল্টাপাল্টি ৪ টি মামলা হয়েছে।
যোগাযোগ করলে তাজুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, হামলাকারীরা হামলা করেও ক্ষান্ত হয়নি, আমাদেরকে আহত অবস্থায় হাসপাতাল নেয়ার পথেও পথ আটকানোর চেষ্টা করেন।
এ বিষয়ে রায়পুর থানার ওসি তদন্ত মোঃ সামসুল আরেফিন বলেন, পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত রাখার চেষ্টা করছে। দুই পক্ষের মামলা হয়েছে, তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নুরে আলম জিকু বলেন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাঃ সম্পাদক তাজুল ইসলাম ও তার পরিবারের সদস্যদের উপর নেক্কারজনক হামলা হয়েছে। প্রকৃত অপরাধীদের সনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবী জানিয়েছেন তিনি।
Leave a Reply