মিঠুন পাল, পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি:
পটুয়াখালীর গলাচিপায় অর্থনৈতিক শুমারি -২০২৪ জনবল নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার ১২ টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভাকে চারটি জোনে বিভক্ত করে সম্প্রতি তালিকাকারী নিয়োগ দিয়েছে উপজেলা পরিসংখ্যান অফিস। যার ৩ দিনের প্রশিক্ষন ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। সেখানে তালিকাকারীদের জন্য নাস্তা ও খাবার বাবদ বরাদ্দের টাকা বন্টন নিয়ে অনিয়ম পাওয়া গেছে।
জানা যায়, শিক্ষিত বেকার যুব / যুব মহিলাদের ও বিগত দিনে বিভিন্ন শুমারির কাজে অভিজ্ঞ দক্ষ জনগোষ্ঠীকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়ার বিধান রয়েছে। তবে গলাচিপা উপজেলায় চিত্র তার উল্টো। এখানে যুবদের বঞ্চিত করে বেসরকারি চাকরি জীবী, এনজিও কর্মী, অনভিজ্ঞ, মধ্যে বয়সী পুরুষ ও নারীদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে উপজেলা পরিসংখ্যান অফিসের কর্মচারী এস এ নিয়োগ বোর্ডের সদস্য সচিব সোহাগ ভূইয়া স্বজনপ্রীতি করে তার পছন্দের লোক দিয়ে তালিকা প্রস্তুত করে তালিকাকারী নিয়োগ দিয়েছে। যা নিয়ে সমালোচনা তৈরি হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে থেকে শুরু করে জনমনে। এদিকে সোহাগ ভূইয়া জোন ১ এর জোনাল অফিসার পদে দ্বায়িত্বে রয়েছে। জনবল নিয়োগটি বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ না করে গোপনে পরিসংখ্যান অফিস হতে জনশুমারির তালিকা থেকে এবং পছন্দের লোক ফোন করে আনা হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
সরেজমিনে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গুলো ঘুরে দেখা যায়, যুবকদের থেকে অধিকাংশ মধ্যে বয়সী পুরুষ ও মহিলাদের অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। এছাড়া প্রশিক্ষণে তালিকাকারীদের জন্য নাস্তা ও দুপুরের খাবার বাবদ বরাদ্দ ৩০০ টাকা যা ভ্যাট বাদে ২৬১ টাকা। সেখানে ১৭৫ টাকার নাস্তা ও খাবার দেয়া হয়েছে। ফলে খাবারের মান নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। নাস্তায় দেয়া হয়েছে, কলা, কেক, সিংগাড়া, ও বিস্কুট এবং দুপুরের খাবারে ভাত, সবজি, মুরগী ও ডাল।
এ নিয়ে কথা হয় নিয়োগ পেতে ভাইভায় অংশগ্রহণকারী একাধিক প্রার্থীর সাথে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা জানায়, জনশুমারী সহ বিভিন্ন শুমারীতে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাদের। এ সূত্রে পরিসংখ্যান অফিস থেকে তাদের ফোন করে ডাকা হয়। পরে ভাইভায় অংশগ্রহণ করানো হয় তাদের। কিন্তু অভিজ্ঞতা থাকা স্বত্বেও নিয়োগ না দিয়ে সোহাগ ভূইয়া তার পছন্দমত তালিকা সাজিয়ে নিয়োগ দিয়েছে। সেখানে স্বামী – স্ত্রী, চাকুরি জীবী নিয়োগ পেয়েছে। এমনকি তারা অভিযোগ করে বলেন, অনেকে ভাইভা না দিয়েও নিয়োগ পেয়েছে যা প্রশ্নবিদ্ধ। তাই এ বিষয়ে তদন্ত করা প্রয়োজন। সরকারের পদক্ষেপ থাকলেও বাস্তবে বেকার সমস্যা সমাধান হচ্ছে না অথচ
যুবদের অগ্রাধিকারেই কমতে পারে বেকারত্ব।
এ বিষয়ে সোহাগ ভূইয়া অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে বলেন, সকল কিছু নিয়ম অনুযায়ী হয়েছে। তবে খাবারে ১৭৫ টাকা ব্যয় করার কথা তিনি স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, আনুষঙ্গিক অন্যান্য খরচ বহন করতে বাকি টাকা ব্যয় করা হয়েছে।
সহকারী পরিসংখ্যান কর্মকর্তা ও উপজেলা সমন্বয়কারী মো. মাসুদ বলেন, অর্থনৈতিক শুমারিতে শিক্ষিত বেকার যুবদের নিয়োগে অগ্রাধিকার থাকলেও অন্যান্যরাও নিয়োগ পেয়েছে। তবে যেসব অভিযোগ উঠেছে প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মহিউদ্দিন আল হেলাল বলেন, নিয়োগে কোন অনিয়ম হয়ে থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply