সিলেট প্রতিনিধি
জৈন্তাপুরে শ্রীপুর পাথর কোয়ারীতে একাধিক বার অভিযান সত্ত্বেও থামছে না বালু পাথর লোট
প্রশাসনের অভিযানকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে নতুন চক্র সক্রিয় ভূমিকায় রয়েছে।
২০১৭ সালের পর থেকে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় বিগত ৭/৮ বছর যাবৎ ভারতীয় সীমান্ত ঘেঁষা শ্রীপুর পাথর কোয়ারীতে সব ধরণের বালু পাথর উত্তোলন বন্ধ রয়েছে সরকারি কাগজপত্রে।
বিক্ষিপ্ত ভাবে কিছু সংখ্যক শ্রমিক জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রশাসন ও বিজিবির চোঁখ ফাঁকি দিয়ে ভারতীয় সীমান্ত ঘেঁষা এলাকা হতে পাথর নিয়ে আসলেও তা পরিবহনের জন্য শ্রীপুর পাথর কোয়ারী এলাকা থেকে বেশ খানিকটা দূরে পাথর ডাম্পিং করে পরিবহন করতো। কিন্তু ফেলে আসা দিন অনুমান ৭ বছর যেখানে কুয়ারী এলাকায় গাড়ী পাথর পরিবহনের জন্য নামতে সাহস পেতো না সম্প্রতি সময়ে অদৃশ্য শক্তির কারণে মূল কোয়ারী এলাকায় সরাসরি গাড়ী নেমে পাথর বালু পরিবহনের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
নতুন একটি সিন্ডিকেট চক্র তাদের পেশী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে প্রশাসন ও বিজিবির নাম ভাঙিয়ে গাড়ী প্রতি নির্দিষ্ট অংকের চাঁদা আদায়ের অভিযোগও রয়েছে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে।শুধু তাই নয় বরং উপজেলা প্রশাসনসহ একাধিক বার টাস্কফোর্সের অভিযান সত্ত্বেও জব্দকৃত পাথর ও বালু জোরপূর্বক কোয়ারীর ডাম্পিং এরিয়াতে গাড়ী নামিয়ে বিক্রির ঘটনাও ঘটছে।বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সরজমিনে গিয়ে দেখা মিলে বাংলাদেশ ভারত সীমান্ত পিলার ১২৭৯-১২৮০-১২৮১ মেইন পিলারের নিকটবর্তী এলাকা হইতে দিন দুপুরে ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে কয়েকশ শ্রমিক পাথর নিয়ে আসছে।কয়েক বছর যাবত অনুরূপ নিয়মে রাতের আঁধারে পাথর নৌকা যোগে বহন করে মূল কোয়ারী এলাকা হতে অন্যত্রে সরিয়ে নিয়ে লোডিং করলেও কয়েক সপ্তাহ ধরে নতুন সিন্ডিকেট চক্র মূল কোয়ারী এলাকায় পাথর জমা রেখে কোয়ারী এলাকায় গাড়ী নামিয়ে বিক্রি করে আসছে।
সাংবাদিক পরিচয় গোপন করে কিছু শ্রমিকদের সাথে আলাপ কালে নতুন সিন্ডিকেট চক্রের কয়েকজন সদস্যদের নাম তালিকায় উঠে আসে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হেমার শ্রমিক জানান কয়েক সপ্তাহ যাবৎ কেন্দ্রী গ্রামে বাসিন্দা শামিম,গুচ্ছগ্রাম এলাকার সুমন মেম্বার,খারুবিল এলাকার নজির মিয়া ও ৪নং বাংলা বাজার এলাকার দিলদার হোসেন চক্রের নেতৃত্ব দিয়ে আসছে।
অভিযোগ রয়েছে নতুন করে কোন ব্যবসায়ী পাথর উত্তোলনের কাজে জড়িত হতে হলে ৫হাজার টাকা প্রাথমিক ভাবে সিন্ডিকেট চক্রটিকে দিতে হয়। আর প্রতি সপ্তাহে নির্দিষ্ট টাকা বিভিন্ন মাধ্যমের নামে উত্তোলন করা হয়।টাকা উত্তোলনের দায়িত্ব সুমন মেম্বার ও জাকির হোসেন পালন করে থাকেন। এছাড়া এই সিন্ডিকেট চক্রের আরো সদস্যের মধ্যে নুর ইসলাম, আক্কাস আলি, বালফু সুমন ও মরমের নাম জড়িয়ে রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,অক্টোবর মাসে জৈন্তাপুর উপজেলা প্রশাসন,শ্রীপুর বিজিবি,মিনাটিলা বিজিবি যৌথ টাস্কফোর্সের অভিযানে প্রায় ১৫ হাজার ঘনফুট পাথর জব্দ করে।সেই জব্দ হওয়া পাথর গুলো স্থানীয় ইউ/পি সদস্যের জিম্মায় রাখা হয়। অভিযোগ উঠেছে এই সিন্ডিকেট চক্রের পেশি শক্তির প্রভাবে জব্দকৃত পাথর গুলো অবাধে বিক্রি শুরু হয়।অবস্থাটা এমন যেন টাস্কফোর্সের অভিযান এলে কিছুক্ষণের জন্য সবাই সাধু সেজে গেলেও অভিযান শেষ হলে তারা স্বরূপে ফিরে আসেন।
জৈন্তাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারজানা আক্তার লাবনী বলেন,গত সপ্তাহের মাঝামাঝি কোয়ারীতে মজুদ করে রাখা পাথর ও বালু জব্দ করে চারপাশে লাল নিশানা স্থাপন করা হয়েছিলো।সেই সাথে উক্ত স্থানে কি পরিমান পাথর জব্দ করা হয়েছে তার একটি আনুমানিক হিসাব করে রাখা হয়েছিলো।
তিনি বলেন, শনিবার পুনরায় শ্রীপুর পাথর কোয়ারী এলাকায় গিয়ে সরাসরি বালু লোডিং এর প্রমাণ পেয়েছে প্রশাসন।পরে একটি মামলা সহ দুই গাড়ী বালু জব্দ ও জরিমানা আদায় করা হয়।জব্দকৃত পাথর গুলো প্রশাসন সরে যাবার পরে যারা বিক্রির সাথে জড়িত হবে তাদের বিরুদ্ধে তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।চলতি মাসের তৃতীয় কিংবা শেষ সপ্তাহে জব্দ করা পাথর নিলামের ব্যবস্থা করা হবে বলেন।
তাছাড়া নিষেধাজ্ঞা অমাণ্য করে শ্রীপুর পাথর কোয়ারী এলাকায় যারা পাথর উত্তোলনের কাজে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।পাশাপাশি প্রশাসন ও টাস্কফোর্সের অভিযান নিয়মিত পরিচালনা করা হবে বলে তিনি নিশ্চিত করেন।
Design & Developed BY: ServerSold.com
https://writingbachelorthesis.com
Leave a Reply