মোহাম্মদ মাসুদ বিশেষ প্রতিনিধি
পেঁয়াজ নিয়ে দেশে ভারতের আগামী তিন মাস রপ্তানি বন্ধের ইস্যুতে আবারও পেঁয়াজের লাগামহীন বাজারে দরে নানা আলোচনা সমালোচনা গুজব-গুঞ্জনে সড়ক প্রতিটি মানুষের মুখে মুখে দেশজুড়ে। একদিকে সবকিছুর দ্রব্যমূলের ঊর্ধ্বগতিে লাগামহীন বাজার উত্তপ্ত মুহূর্তের মধ্যে পেঁয়াজ চড়া বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজিতে পর্যায়ক্রমে ৩০-৫০ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। ভারত রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা মাত্রই কিছু বুঝে ওঠার আগেই ফের অস্থির হচ্ছে পেঁয়াজের বাজার।
পাশাপাশি রয়েছে কর্তৃপক্ষের বাজার মনিটরিং,জবাবদিহিতা সক্রিয়তার অভাব। ক্রেতা বান্ধব গ্রাহক সেবায় বিপরীতে নানা নেতিবাচক প্রতিবন্ধীকতায় দুর্বলতা ও নিষ্ক্রিয়তা গাফিলতি অবহেলা । রয়েছে অসাধু ও অতিরিক্ত মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ইস্যুতে সুবিধাভোগী মজুদদার লোভী ব্যবসায়ী চক্রের নানা সুকৌশল কারসাজি। সাধারণ ক্রেতাদের পকেট ফাঁকা করছে শত কোটি টাকা এটা যেন অভিনব কায়দায় লুটপাটের মতো। চাহিদার তুলনায় উৎপাদন,আমদানি ও সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকলেও ১দিনের ব্যবধানে খুচরা বাজারে কেজিপ্রতি ৩০ টাকা বাড়ানো কোন কোন ক্ষেত্রে ক্রেতার সর্বোচ্চ ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৪০টাকা।দেশি পেঁয়াজ ১৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
আজ শনিবার ও গত শুক্রবার খুচরা বাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।তারা বলেন,এর আগের দিন ৯০ টাকা করে বিক্রি করেছি কিন্তু আজ মোকামে পাইকারি বাজার দর হচ্ছে ১২০ টাকা।এখন আরো বাড়িয়ে বেচতে হবে। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন- ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করলেও বর্তমানে দেশের বাজারে প্রভাব পড়ার কোনো কারণ নেই। কারণে দেশে চাহিদার তুলনায় উৎপাদন ও আমদানি পর্যাপ্ত পরিমাণে হয়েছে। পাশাপাশি নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজ বাজারে উঠতে শুরু করেছে। ফলে এখন দাম বাড়া অযৌক্তিক। তাই তদারকির মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তা না হলে অসাধু মহল আবার পেঁয়াজের দাম নিয়ে ভোক্তাকে নাজেহাল করে ফেলবে।এদিকে বৃহস্পতিবার ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেড পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার পেঁয়াজ রপ্তানির নীতিতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এনেছে। বৃহস্পতিবার থেকে রপ্তানি বন্ধ কার্যকর হয়েছে। আর ৩১ মার্চ পর্যন্ত ভারত থেকে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ থাকবে।নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, এ নোটিশ জারির আগে পেঁয়াজের গাড়ি লোড হয়ে থাকলে সেটি সংশ্লিষ্ট দেশে পৌঁছে যাবে। অথবা পেঁয়াজ ভর্তি গাড়ি বা জাহাজ ভারতীয় পোর্ট অতিক্রম করলে সেটি এ নির্দেশনার আওতায় পড়বে না। এছাড়া কোনো দেশের সরকারের অনুরোধে ভারত সরকার চাইলে পেঁয়াজ রপ্তানির নীতিতে পরিবর্তন আনতে পারবে।শুক্রবার চাকতাই খুচরা বাজার ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ দিন প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ১৪০-১৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। যা এক দিন আগে ও ১৩০-১৩৫ টাকা ছিল। পাশাপাশি আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা। যা ১ দিন আগে বৃহস্পতিবার ১১০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ২৫ লাখ টন। কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, এ বছর দেশে প্রায় ৩৪ লাখ টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে। কিন্তু মজুত সুবিধার অভাবে দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের প্রায় ২৫ শতাংশ নষ্ট হয়েছে। ফলে প্রায় সাড়ে ৬ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়েছে। তাই এই মুহূর্তে দেশে পেঁয়াজের সরবরাহ পর্যাপ্ত রয়েছে।জানতে চাইলে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, এই মুহূর্তে দেশের পেঁয়াজের দাম বাড়ার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। যতবার ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করেছে, দেশে ঠিক ততবার অসাধু ব্যবসায়ীরা কারসাজি করে দাম বাড়িয়েছে। এবারও একই চিত্র দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন, দেশে চাহিদার তুলনায় উৎপাদন ও আমদানি পর্যাপ্ত পরিমাণে হয়েছে। পাশাপাশি নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজ বাজারে উঠতে শুরু করেছে। তাই তদারকির মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তা না হয় অসাধু চক্র ফের ভোক্তার পকেট কাটবে। হাতিয়ে নিবে সাধারণ মানুষের শত শত কোটি টাকা।
Design & Developed BY: ServerSold.com
https://writingbachelorthesis.com
Leave a Reply